আমাদের চোখে অতি শ্রদ্ধার ও সম্মানের স্থানে অধিষ্ঠিত একজন সিনিয়র সিটিজেন জনাব টিপু সুলতান সাহেব তাঁর নিজের গলায় লেমিনেটিং পোস্টার ঝুলিয়ে হাতে এক গাদা বই নিয়ে মেলার এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ঘুরে ঘুরে নিজের লেখা বই প্রচার ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ও ইংরেজি বানান শিক্ষা নিয়ে যে মজাদার ঘটনা ঘটিয়ে এখন ভাইরাল , আসুন – সেই বিষয়ে দু’লাইন কথা বলি |
উনি উনার জায়গা থেকে চেষ্টা করছেন — আমাদের মধ্যে একটু বই পড়া ও বাংলা ভাষার প্রতি সন্মান ও শেখার আগ্রহ তৈরী করাতে | উনি সাকসেসফুল না ব্যর্থ , সেই আলোচনায় যাবো না | এই বয়সের একজন মানুষ যে একা একা এই কাজটুকু করে যাচ্ছেন , সেটাকে ধন্যবাদ দিতে কার্পণ্য করছে না শা টিম ! আজকে হয়তো কিছু সাংবাদিক ও ট্রলমাস্টাররা উনাকে নিয়ে ঠাট্টা মস্করা করছেন — এই সাংবাদিকরাই , এই ট্রলবাজরাই কি আমাদের এসএসসি এইচএসসি জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করেননি ? এইতো গত তিনদিন আগেও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে — মেলায় ঘুরতে আসা অনেক তরুণ যুবকরাই ( তরুণী সহ ) জানে না – ভাষা আন্দোলন কোন সালে হয়েছিল ? আমাদের স্বাধীনতা দিবস কবে ? আমাদের ১৬ই ডিসেম্বর মানে কি ? ভাষা শহীদদের নাম বলতে পারেনি এই প্রজন্মের শিক্ষিত তরুণ-তরুণী ! এই লজ্জা ঢাকবেন কিসে ? ” আই এম জিপিএ ফাইভ “– এখনো ডিলিট হয়নি ভাইরাল নেটওয়ার্ক থেকে !! সুতরাং , অন্যের শিক্ষার উদ্যোগে হাসি-তামশা না করে নিজের মুখটি আয়নায় দেখুন | বই লেখা ও বই প্রকাশ করার অভিজ্ঞতা কি আছে , যারা উনাকে নিয়ে ট্রল করছেন ? একজন সিনিয়র সিটিজেনের মাথার ছবি কাট-পেস্ট করে বিভিন্ন মার্কেটিংয়ে ব্যবহার করছেন – এটা যে একটা অপরাধ , এই বিষয়ে বিন্দুমাত্র জ্ঞান-বুদ্ধি এই তরুণ-যুবকদের মধ্যে আছে কিনা আমাদের জানা নেই ! পৃথিবীর সবকিছুকে নিয়ে মজা করবার রাজধানী যেন বাংলাদেশ !!
টিপু সুলতান সাহেব হয়তো তিনটি শব্দের উত্তর দিতে পারেননি, এটা খুবই সিম্পল একটা বিষয় ! আমাদেরকে যদি বলেন, উগান্ডার ভিসার রিকুয়ার্মেন্টস কি, আমরা কি বলতে পারবো ? পারবো না !!
ব্যাপারটা তেমনি | উনি যেটা বলতে পারতেন – ” দেখুন, আমার এই তিনটি শব্দের বাংলা জানা নেই, নেক্সট টাইম যখন মেলায় আসবো, তখন অবশ্যই জেনে আসবো | আমাকে ক্ষমা করবেন | “
শুনুন, মানুষের যখন বয়স হয়ে যায়, তখন মানুষ একরকম শিশুর মতন হয়ে যায় ! আপনার বাড়িতে ষাটোর্ধ , সত্তর কিংবা আশির কোঠা ছুঁয়েছে , এমন সিনিয়রদের সাথে কথা বললেই বুঝবেন- একটা সময়ে অতি জাদরেল জেদি রাগী মানুষটিও শিশুর মতন হয়ে যান | এটাই মানব জীবন ! উনার না পারার মধ্যে যে শিশুসুলভ হাসি লুকায়িত ছিল , লজ্জা ও কষ্ট ছিল – সেটা আবিষ্কার করেছে শা টিম | লজ্জায় মাথা নত হয়েছে আমাদের | এই লজ্জা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ও পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ! সবকিছুর পরেও , একজন নিবেদিত সহজ-সরল শিক্ষার ফেরিওয়ালা জনাব টিপু সুলতানকে তাঁর এই অক্লান্ত জ্ঞান বিতরণের ঐকিক প্রচেষ্টাকে শা টিম জানাচ্ছে গ্রেট স্যালুট ! — শা অ্যাডমিন ম্যানেজার