L O A D I N G

ছয়বার রিফিউজ্ড ……!!! সাতবারের মাথায় ভিসা। একটি স্বপ্নের গল্প

সাদিয়া মাকসুদ ম্যাডাম যখন আমার কাছে আসেন, এবং পুরো ঘটনা শেয়ার করেন ; আমি উনার মুখের দিকে তাকাতে কষ্ট হচ্ছিলো। দুই ভাইবোন কানাডার ইমিগ্রেন্ট। কিন্তু মাকে সেই স্বপ্নের দেশে নিতে পারছেন না। মা শিরিন আহমেদ একা একা ঢাকায় থেকে শুধু মন খারাপ করেন , নাতিদের দেখা হয়না। তাদের আদর করা হচ্ছে না। মেসেঞ্জারে কিংবা হোয়াটস্যাপ-এ কল করে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটান। ঢাকায় কানাডিয়ান লয়ার ( ICCRC সার্টিফাইড ) ধরেছেন , রেজাল্ট জিরো। নিজে নিজে এবং অন্যান্য ফার্ম ধরে মোট ছয়বার রিফিউজ্ড হয়ে চুপচাপ হয়ে গেলেন। কোথা থেকে যেন শুনেছেন আমার কথা। কিশোরগঞ্জের দীপক দাস নামে এক ভদ্রলোক নাকি খুব কনফিডেন্সের সাথে বলেছেন, ” আপনি লাস্ট একবার উনার কাছে ফাইলটা জমা দেন , আমার বিশ্বাস আপনার মায়ের ভিসা হবে। ” সেই বিশ্বাসের সূত্র ধরেই আমার কাছে এসে ফাইল জমা দিলেন। আমি ছয়বারের রিফিউজ্ড ফাইল নিয়ে একরকম গবেষণায় বসে পড়লাম। কেপসনোটের পাতা উল্টাই , আর ভাবি — কিভাবে ভুল-ভাল ফাইল জমা দিয়ে একজন মাকে গত নয়টি বছর তাঁর সন্তানের কাছে যাওয়া থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে !? লম্বা লম্বা কথা বলায় এ’দেশের কিছু মানুষের জুড়ি নেই। অনেকে আবার বিজ্ঞাপন দেন, ভাড়া অফিস হলে নাকি তারা অনভিজ্ঞ ভুয়া ফার্ম। এ’দেশে কতরকমের পাগল যে আছে, সেটা নিয়েই একটা গবেষণা হওয়া দরকার। যাই হউক, সাদিয়া ম্যাডাম আর হারিস সাবের মুখে হাসি ফুটিয়ে দিয়েছি মাত্র ষোলো দিনে। ভিসা হয়েছে শুনে প্রথমেই বিশ্বাস হচ্ছিলো না উনার। আবেগে কেঁদে দিলেন। সাদিয়া ম্যাডাম আমাকে অনেক বড় গিফট দিয়েছেন। কিন্তু ভাই-বোনের এই হাস্যোজ্বল মুখ আমার কাছে ঈদের সেরা গিফট। মাকে নিয়ে ঈদের পরই কানাডার আকাশে উড়াল দিবেন ম্যাডাম। তাঁর লেখা চিঠিটা শেয়ার করলাম। — সুপ্রিয় কুমার চক্রবর্তী, সিইও , শা এসোসিয়েটস। 

Leave a Comment